আমরা আমাদের ক্ষুধা নিবারণ করার জন্য খাদ্য গ্রহণ করে থাকি। যেসব বস্তু খাওয়ার পর দেহে শোষিত হয়ে বিভিন্ন কার্য সম্পাদন করে তাকে খাদ্য বলা হয়। জীবন-ধারণের জন্য যেমন খাদ্য অপরিহার্য তেমনি সুস্বাস্থের জন্য খাদ্য তথা পুষ্টিকর ও সুষম খাদ্য প্রয়োজন। এই খাদ্য জীব কোষে জড়িত হয়ে দেহে তাপ এবং শক্তি তৈরি করে। খাদ্য আমাদের দেহে শক্তি প্রদান করে। খাবার খাওয়ার উপকারিতা নিয়ে এখন কিছু কখা বলবো।
আসলে খাবার না খেয়ে বেঁচে থাকা অসম্ভব, কারণ আমরা যখন খাবার খাই খাবারটি আমাদের শরীরের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের শক্তি উৎপাদন করে থাকে। এসব শক্তির মাধ্যমে আমরা চলাফেরা করতে পারি, এছাড়াও আমাদের যদি শক্তি না থাকে তাহলে তো আমরা চলাফেরা করতে পারবো না। এর ফলে অসুস্থ হয়ে যাবো, শক্তি বাড়াতে হলে খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
একটা কথা বিশেষভাবে জেনে নেওয়া জরুরী কথাটি হচ্ছে খাবার আমরা খাব ঠিক আছে, কিন্তু আমাদের আগে জেনে নিতে হবে যে খাবারটি বিশুদ্ধ আছে কিনা। বিশুদ্ধ খাবার খেলে আমাদের আমাদের শরীর সুস্থ এবং সবল এবং স্বচালিত থাকে। আর আমরা যখন বিশুদ্ধ খাবার খাব না তখন আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের অসুখ-বিসুখ বাসা বাঁধবে।
খাবার খাওয়ার নিয়মাবলী
আমাদের সকলের করণীয় হচ্ছে সব সময় খাবারটি দেখেশুনে খাওয়া ,কারণ খাবার যদি আমরা না দেখে খায় তাহলে খাবারের ভিতরে খারাপ কোন জিনিস থেকে যেতে পারে, যা আমরা না দেখে খাওয়ার কারণে আমাদের পেটের ভিতর চলে যাবে এবং পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করবে। খাবার আমাদের জন্য দরকারী এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। খাবার না খেলে কোন প্রাণী বা মানুষ বা জীবজন্তু বেঁচে থাকতে পারবে না। বেঁচে থাকতে হলে খাবার একটি অপরিহার্য বিষয়।
খাবার আমরা আমাদের মুখের রুচি স্বাদ, গন্ধ অনুযায়ী গ্রহন করি। আমাদের দেহ কে সুস্থ ভাবে পরিচালনা করার জন্য খাবার সব থেকে বেশি উপযোগী। “সুস্থতা সকল সুখের মূল” আমারা সকলেই প্রায় এই প্রবাদটার সাথে পরিচিত। সুস্থ থাকতে হলে আমাদের সকলের খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। খাদ্য আমাদের পুষ্টিসাধন, দেহের ক্ষয় পূরণ, দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং কর্ম শক্তি ও তাপ শক্তি উৎপাদন করে।
সুস্থ থাকার জন্য আমাদের ঠিক ভাবে খাদ্য গ্রহণ করার পাশাপাশি সঠিক সময়ে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। প্রতি দিন তিন থেকে চার ঘন্টা পর পর খাবার গ্রহণ করতে হবে কারণ আমাদের শরীর খাবার ঠিক মতো হজম করতে সময় নেয় তিন থেকে চার ঘন্টা সময়। আবার খাবার গ্রহণে বিরতি বেশি হলে আ্যসিড সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকে। হালকা কিছু খাবার বা ফল খাওয়া ভালো দুই বেলা খাবারের মাঝে।
দেহ চক্র সক্রিয় রাখে বা নিয়ন্ত্রণ করে :
আমাদের মেনে চলা উচিত, সঠিক পুষ্টি, উন্নত ঘুম চক্রো, সুশৃংখল খাবার চক্র এবং সুশৃংখল খাবার সময়। দেহ চক্র সঠিক ভাবে পরিচালিত হয় এই অভ্যাস গুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের দেহ চক্র সঠিক ভাবে পরিচালনা করার জন্য আমাদের সঠিক সময়ে খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
বিপাক বৃদ্ধি :
শরীরের বিপাক হার নির্ভর করে খাবারের সময় সীমার উপর। আমাদের শরীরের বিপাক হার সব থেকে বেশি থাকে সকালে ঘুম থেকে উঠার সঙ্গে সঙ্গে। তাই শরীরের বিপাকের হার বজায় রাখতে সক্ষম হবে না এই সময়ে পর্যাপ্ত খাবার খাওয়া না হলে। বিপাকের হার হ্রাস পেতে থাকে দিন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে। তাই ঠিক মতো খাবার হজম করার জন্য রাতের খাবার রাত আটটার মধ্যে খাওয়া প্রয়োজন।
বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশনে সহায়তা করে :
শরীর অনেক কিছু গ্রহণ করে খাবারের মাধ্যমে। যকৃৎ শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ নিষ্কাশনে সহায়তা করে। আর যকৃৎ কার্যকরীতার মাধ্যমে বা যকৃৎ কার্যকরীতার উপর খাবার গ্রহণের সময় সীমা প্রভাব রাখে। রাত দশটা বা তার পরে খাবার খাওয়া হলে তা ঘুমের সময়ের কাছাকাছি হয়ে যায়। এর ফলে যকৃৎ ঠিক মতো নিষ্কাশনের কাজ করতে পারে না এবং শরীরের চাপ সৃষ্টি হয়। তাই এই প্রক্রিয়া কে সচল রাখতে রাতে ঠিক মতো খাবার খাওয়া জরুরি।
সময় মত খাবার খাওয়া:
আমরা যদি দিনে ঠিক মতো খাবার গ্রহণ না করি তাহলে আমাদের শরীরের ও স্বাস্থে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। খাবার যেহেতু আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সেহেতু নিয়মিত খাবার গ্রহণ নি করলে আমরা বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হতে পারি। আর খাবার খাওয়ার সময় আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় সুষম খাদ্য রাখতে হবে। সুষম খাদ্য আমাদের দেহের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের সকলের নিয়মিত সঠিক খাদ্য গ্রহণ করতে হবে।