মুখে ব্রণ উঠে মুখের সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয়। আর একবার ব্রন হলে সেই দাগ আর সহজে যেতে চায় না। ব্রন এবং ব্রনের দাগ নিয়ে নারী পুরুষ সকলেই কম বেশি ভুগে থাকেন। তবে ব্রনের চয়ে ব্রনের দাগ দূর করা বেশি কষ্টকর। ব্রন চলে যায় অল্প সময়েই। কিন্তু ব্রনের দাগ সহজে যেতেই চায় না। এখন যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব সেটি হচ্ছে ব্রণের দাগ দূর করার উপায়।
আমাদের ত্বকের ঔজ্জ্বল্য এবং সৌন্দর্য নষ্ট করে দেয় ব্রণ। আমাদের ত্বকের তৈলগ্রন্থি ব্যাটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়। তারপর এর আকৃতি বৃদ্ধি এবং তখন এর ভিতরে পুঁজ জমা হতে থাকে। একসময় এটা ব্রণের আকার ধারণ করে। সাধারণত অল্প বয়সী ছেলে মেয়েরাই ব্রণ ও ব্রণের দাগ নিয়ে বেশি ভুগে থাকে।
ব্রণ এবং ব্রনের দাগ থেকে বাঁচতে কিছু উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে বাজারের কসমেটিক্স এর পরিবর্তে ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।যা সহজেই আমাদের ব্রণের দাগ কমাতে সাহায্য করবে।তাছাড়া এসব ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক সামগ্রীই সবচেয়ে ভালো আর নিরাপদ। এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হওয়ার ও ভয় থাকে না।
ঘরোয়া উপায়ে ব্রনের দাগ দূর করার কিছু কার্যকর পদ্ধতি দেওয়া হলো –
মুলতানি মাটি :
ব্রনের দাগ দূর করতে মুলতানি মাটি অনেক বেশি কার্যকর। আমাদের ত্বক অতিরিক্ত তৈলাক্ত হলে ব্রণের সমস্যা দেখা দেয়।ত্বকের এই তৈলাক্ততা দূর করতে মুলতানি মাটি ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে মুলতানি মাটি পানি দিয়ে পেস্ট করে মুখে ব্যবহার করতে হবে। মুলতানি মাটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ বন্ধ করে দেয়। যায় ফলে ব্রণ ওঠা বন্ধ হয় ও ব্রনের দাগ ও খুব দ্রুত কমিয়ে দেয়।
শশার রস :
শসার রস মুখে ব্রণের দাগ দূর করতে খুবই কার্যকরী। শসার রস স্ক্রাব হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এর জন্য শসার রসের সাথে চালের গুঁড়া মিশিয়ে নিন। সাথে সামান্য মধুও মিশিয়ে নিতে পারেন। সপ্তাহে দুই দিন এই প্যাক ব্যবহার করলে ত্বক ভেতর থেকে পরিষ্কার ও দাগ মুক্ত করবে। ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস এর সমস্যা ও দূর হবে। তবে ব্রণ থাকাকালীন সময় এ এই স্ক্রাব ব্যবহার করা যাবে না। এই স্ক্রাব টি ব্যবহার করতে হবে ব্রণের দাগ দূর করতে। এবং এটি ব্যবহার এ ভালো ফল পাওয়া যাবে।
কাঁচা হলুদ :
ব্রণ দূর করতে কাঁচা হলুদ কার্যকরী একটি উপাদান । প্রথমে বাটা কাঁচা হলুদ নিতে হবে। তারপর এতে পরিমাণমতো পানি মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করতে হবে। মিশ্রণটি ব্রণ আক্রান্ত জায়গায় লাগিয়ে রেখতে হবে। কিছুক্ষণ পর শুকিয়ে গেলে মুখঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। এটি ব্যবহারে ব্রন এর সাথে সাথে ব্রণের দাগ ও দূর হবে।
মধুর মিশ্রন:
ব্রণের দাগ দূর করার জন্য মধু ব্যবহার করতে পারেন। আপেলের পেষ্ট তৈরি করে তাতে কয়েকফোটা মধু মিশিয়ে নিতে হবে। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। এরপর মুখ ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ৫-৬ বার এটি ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।
চন্দন কাঠের গুঁড়া :
চন্দন কাঠ ও গোলাপ জল মিশিয়ে পেষ্ট তৈরি করুন। এরপর এতে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মেশাতে হবে। এই প্যাকটি আপনার ব্রণের দাগ দূর করতে সাহায্য করবে। সপ্তাহে ৩-৪দিন ব্যবহার করলে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। ব্রনের দাগ অনেক হালকা হয়ে যায়।
দারুচিনি
দারুচিনি গুড়ার সাথে গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই পেস্ট ব্রণের উপর লাগাতে হবে। তারপর ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ব্রণের সংক্রমণ কমে যাবে।পাশাপাশি চুলকানি এবং ব্যথা ও অনেকটাই কমে যাবে। আর দাগ কমাতেও এটা অনেক সাহায্য করবে।
আলুর রস :
ব্রনের দাগ দূর করতে আলুর রস অনেক উপকারী। সরাসরি ত্বকে আলুর রস ব্যবহার করা যায়। আলু ছেচে নিয়ে তার রস কিছুক্ষণ মুখে লাগিয়ে রাখতে হবে। এতে অনেক ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।
টকদই প্যাক :
টকদই ত্বকের জন্য অনেক উপকারী। টকদই মুখে ব্রনের দাগ কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি টকদই মুখের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে দেয়। পরিশেষে দেখা গেলো, ব্রনের দাগ দূর করার অনেক ঘরোয়া উপায় আছে এবং এর সব উপাদান গুলোই কমবেশি আমাদের ঘরে আছে। এই ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো ব্যবহাররে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তাই ব্রনের দাগ দূর করতে আমাদের উচিৎ কসমেটিকস ব্যবহার না করে ঘরোয়া পদ্ধতি গুলো ব্যবহার করা।